মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:২৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
নিরাপত্তা ঝুঁকিতে বাঁশখালীর ১৩২০ মেগাওয়ার্ট এস.এস.পাওয়ার প্ল্যান্ট ! বাঁশখালী‌তে ইপসার উদ্যেগে ইন্টারপ্রেটার পুলের রিফ্রেশার ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ট্রেনিং বাঁশখালীতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির কাউন্সিল সম্পন্ন বাঁশখালীর জলদী ভাদালিয়া সরকা‌রি প্রাথ‌মিক বিদ‌্যাল‌য়ে মা সমাবেশ বাঁশখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতা বাঁশখালীতে মীর শায়খুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের উ‌দ্যো‌গে ফ্রি চক্ষু সেবা ক্যাম্প বাঁশখালী‌তে সৃজন মেধাবৃত্তি পরীক্ষার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন বাঁশখালীতে চেয়ারম্যান লেয়াকত আলীর নেতৃত্বে বিএনপির সমাবেশ বাঁশখালী পৌরসভায় বিএনপির বিজয় র‌্যালী ও সমাবেশ দক্ষিণ বাঁশখালীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালি ও সমাবেশ

নিরাপত্তা ঝুঁকিতে বাঁশখালীর ১৩২০ মেগাওয়ার্ট এস.এস.পাওয়ার প্ল্যান্ট !

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৩৫ জন পড়েছেন
oppo_2

বাংলাদেশের ব্যবহার করা বিদ্যুতের ১০% বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় বাঁশখালীর গন্ডামারায় অবস্থিত ১৩২০ মেগাওয়াট এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট(কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র) থেকে। ১৩২০ মেগাওয়াট এস.এস পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে জাতীয় গ্রীড়ে ১২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরববাহ করা হয়। অথচ বিগত দিনে প্রকল্পে চুরি করতে এসে চুরিকাঘাতে সিকিউরিটি খুন এবং সম্প্রতি সময়ে নিরাপত্তার দায়িত্বরত এবং প্রকল্পের কর্মচারিদের হুমকি দেওয়ার প্রেক্ষিতে আবারো নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে প্রকল্পে দায়িত্বরতদের সুত্রে জানা যায়। অপরদিকে প্রকল্পের কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ ভেড়ার স্থলে স্থানীয় জেলেদের মাছ , মালামাল পরিবহন করায় জেটি নির্মাণ কাজ করতে বিঘœ সৃষ্টি এবং জেলেদের মানববন্ধন সহ নানা কারণে যে কোন সময়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ হতে পারে এ আশংকায় বিরাজ করছে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয়দের মাঝে!
দেশের সর্ববৃহৎ ১৩২০ মেগাওয়াট এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টটি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সরকার ও চীনের সেপকো থ্রির যৌথ মালিকানাধীন নির্মিত বিদ্যুৎ প্রকল্পটি ২০২৩ সালে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এই প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সবচেয়ে কম দামে জাতীয় গ্রীড়ে ও সরকারকে সরবরাহ করা হয়। যা বাংলাদেশের ব্যবহার করা বিদ্যুতের ১০% বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় বাঁশখালীর ১৩২০ মেগাওয়াট এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট(কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র) থেকে। প্রকল্পটি চালু ও সচল রাখার অন্যতম মাধ্যম হল কয়লা। প্রতিদিন গড়ে এ প্রকল্পে ১২ হাজার মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন। কয়লা মজুদ নিশ্চিত করার জন্য প্রকল্পের সুনিদিষ্ট কর্ম পরিকল্পনার অংশ হিসাবে পাওয়ার প্ল্যান্টের ক্রয় ও লিজ কৃত জায়গায় এবং নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত জেটিতে কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ ভিড়াতে বাঁধা মুখে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় জেলেরা। জেলেদের মাছ ধরার জাল বসানো ও ছোট ছোট নৌকা ও ফিশিং বোট চলাচলের ফলে লাইটার জাহাজ গুলো কয়লা নিয়ে জেটিতে ভিড়তে পারছে না। জেটিতে ড্রেজিং করার কাজ করতে গিয়ে জেলেদের সাথে বিরুদের ফলে,জেটির কাজ করতে না পারায়, কয়লা আসতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়াতে কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রকল্প টি এ আশংকা করা হচ্ছে। তবে তা নিরসনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামশেদুল আলম কে এসএস পাওয়ার ওয়ান এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ট্যান জেহলিং একটি অবহিত পত্র প্রদান করেন।
২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর মাসে এস.এস পাওয়ার প্ল্যান্টে মালামাল চুরি করতে এসে অরক্ষিত থাকার কারণে একদল দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে ২ জন নিরাপত্তা কর্মী খুন হয়েছিল। সে ঘটনায় প্রকল্পের সাইট প্রজেষ্ট ম্যানেজার মো: ফয়েজুর রহমান বাদী হয়ে ২ জন জ্ঞাত এবং অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনকে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে ও গ্রেফতারের পর বর্তমানে জামিনে এসে আবারো নতুন করে পূর্বের মত অপরাধ সংঘটিত করার পায়তারা করছে এবং গত ২৬ জুন আবারো নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের উপর হামলা সহ প্রতিনিয়ত প্রকল্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে কয়লাবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ সূত্র জানা যায়।
সরেজমিনে পরিদর্শণ কালে দেখা ও প্রকল্পে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রজেক্টের ড্রেজিং এর কাজ চলমান থাকায় প্রতিনিয়ত কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ গুলো জেটিতে আসতে শুরু করেছে। অনেক সময় লাইটার জাহাজ গুলোতে চুরি ডাকাতি সংঘটিত হচ্ছে। জেটির অভ্যান্তরে ও এলাকায় সাম্পান (বোট) বা জাল বসানো লোকজনের অবাদ বিচরনের কারনে প্রজেক্টের অপারেশন কাজের ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকল্পের জেটি সীমানায় কোন রকম জাল বসানো বা বোট ভিড়ানো বন্ধে উক্ত এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। অপরদিকে স্থানীয় জেলেদের পক্ষে আবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি জেটিঘাটে ড্রেজিং বন্ধ চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করেছেন বলে সুত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে এস.এস. পাওয়ার প্ল্যান্টের সাইট প্রজেক্ট ম্যানেজার ফয়জুর রহমান স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানান, এই জেটি ও ব্রেক ওয়াটার এস.এস.পাওয়ার এর নিজস্ব সম্পত্তি। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তর সহ সকল আনুমতি মেনেই কাজ পরিচালিত হচ্ছে। এই কয়লা বিদ্যুৎ টি চায়না সি এন্ড এইস(ঈ্ঐ) কোম্পানীর পরিচালিত প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ১৫ দিনের জন্য ১ লক্ষ ১৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুত রয়েছে। দৈনিক ১২ থেকে ১৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পুঁড়ানো হয়। ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লাবাহী ৫ টি বড় জাহাজ গভীর সাগরে অবস্থানরত আছে। লাইটার জাহাজ গুলো জেটিতে ভিড়তে না পারলে কয়লা স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাবে।
এস.এস পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা মেজর মশিউর রহমান বলেন, এ প্রকল্পটি জাতীয় একিিট প্রকল্প, যেটার নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুপ্তপূর্ণ। তাছাড়া জেটিঘাট এলাকাটি প্রকল্পের নিজস্ব জায়গা। বর্তমানে ড্রেজিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। জেলেদের নৌকা ভিড়তে দিলে কয়লাবাহী লাইটার জাহাজে বিঘœ ঘটে। তাছাড়া অনেক সময় জাহাজে চুরি-ডাকাতির ঘটনাও ঘটে। প্রকল্পের নিরাপত্তা ও কাজের স্বার্থে জেটি এলাকায় উন্মুক্ত চলাচল এবং জাল বসানো বা নৌকা ভিড়ার বিষয়টি দেখতে হচ্ছে।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, এস.এস পাওয়ার প্ল্যান্ট টি একটি জাতীয় সম্পদ। সেটার নিরাপত্তা ব্যাপারে পুলিশ সব সময় সচেতন এবং বর্তমানে সেখানকার জেটি নিয়ে জেলেদের হাইকোর্টের একটি মামলা সর্ম্পকে শুনেছেন বলে তিনি জানান।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামশেদুল আলম বলেন, এস.এস পাওয়ার প্ল্যান্টের জেটিতে জেলেদের জাল বসানো ও বোট চলাচল নিয়ে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ড্রেজিং কাজে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় আমাকে লিখিত ভাবে প্রজেক্টের পক্ষ থেকে অবিহিত করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুপ্ত সহকারে বিবেচনায় স্থানীয়দের নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এই পোর্টালের কোনো লেখা বা ছবি ব্যাবহার দন্ডনীয় অপরাধ