চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানা পুলিশ বিশেষ চেক পোষ্ট ও অভিযান চালিয়ে বিরল প্রজাতির ৪টি ধনেশ পাখি উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে। এরপর পাচারকারি ও উদ্ধারকৃত ধনেশ পাখি থানা হেফাজতে রাখা হলেও শুক্রবার সকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার মাহমুদুল হাসান এর নের্তৃত্ব এ মোবাইল কোর্টে পরিচালনা করা হয়। ঘটনায় জড়িতরা মূল পাচারকারি বাগেরহাটের সরন খোলা এলাকার মৃত ফজলুল হকের পুত্র মিজানুর রহমান(৪২) এবং সিএনজি চালক চকরিয়ার পানখালী এলাকার আবদুল মালেকের পুত্র মোহাম্মদ সেলিম (৫২) কে রাজ ধনেশ পাখি বিক্রয়/ পাচারের উদ্দেশ্য পরিবহন করার অপরাধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ এর ৩৪ ধারার অপরাধে ৬ মাসের জেল প্রদান করা হয়। এ সময় ধনেশ পাখি উদ্ধার ও পাচারকারি আটকে নেতৃত্বে দেওয়া সহকারি পুলিশ সুপার( আনোয়ারা সার্কেল) মো: কামরুল হাসান,বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো: কামাল উদ্দিন পিপিএম, রামদাশ হার্ট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো: সোলাইমান, বাঁশখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত শুধাংশু শেখর হাওলাদার, বাঁশখালী থানার এসআই রাজীব কুমার পোদ্দার, মো: মাসুদ, এএসআই মো: খালেক,বাঁশখালীর জলদী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ সহ দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো: কামাল উদ্দিন পিপিএম বিরল প্রজাতির ৪টি ধনেশ পাখি উদ্ধার ও পাচারকারিকে গ্রেফতারের ব্যাপারে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে পাচারকারিরা বান্দরবনের লামা আলীকদম থেকে কক্সবাজারের চকরিয়া পেকুয়া হয়ে বিরল প্রজাতির ৪টি ধনেশ পাখি নিয়ে সিএনজির পিছনে বিশেষ কায়দায় নিয়ে লোহাগড়া সাতকানিয়া সড়ক না হয়ে পেকুয়া বাঁশখালী সড়ক হয়ে যাচ্ছে এ খবরে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে ৪টি চেক বসানো হয়। দীর্ঘ সময় থেকে পাচারকাজে জড়িত পাচারকারি দলের সদস্য সিএনজি চালক চকরিয়ার পানখালী এলাকার আবদুল মালেকের পুত্র মোহাম্মদ সেলিম (৫২) ৩টি চেক পোষ্ট ক্রস করে কালীপুরের গুনাগরি নামক স্থানে গেলে সিএনজিতে বিশেষ কায়দায় পাহাড়ি বাঁশের ভেতরে রক্ষিত ৪টি ধনেশ পাখি উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে মূল পাচারকারি বাগেরহাট জেলার সরনখোলা থানার খোস্তাকাটা ইউনিয়নের পূর্বখোস্তাকাটা গ্রাম এলাকার মৃত ফজলুল হকের পুত্র মিজানুর রহমান(৪২) কে আনোয়ারার মইজ্জার টেক এলাকা থেকে কার সহ আটক করা হয় বলে তিনি জানান। আটক সিএনজি চালক চকরিয়ার পানখালী এলাকার আবদুল মালেকের পুত্র মোহাম্মদ সেলিম পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, সে দীর্ঘদিন যাবত নানা ধরনের বিরল বন্য প্রাণি ৭/৮ হাজার টাকা ভাড়ার বিনিময় লামা আলীকদম, চকরিয়া এলাকা থেকে চট্টগ্রাম ও আনোয়ারায় ফৌঁছে দিত। সেখান থেকে মূল পাচারকারি অন্যত্র নিয়ে যেত। উদ্ধারকৃত রাজ ধনেশ পাখির বাজার মূল্য ৭/৮লক্ষ টাকা হতে পারে বলে পুলিশ জানায়। উদ্ধারকৃত রাজ ধনেশ পাখি চট্টগ্রামের চিড়িয়াখানায় দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে বনবিভাগ সুত্রে জানা যায়।
সুত্রে জানা যায়,পৃথিবী ব্যাপী ৫৬ প্রজাতির ধনেশ থাকলেও বাংলাদেশে ৪ প্রজাতির ধনেশ আছে। ধনেশ ঠোঁটের সাহায্যে আহার (শক্ত কীটপতঙ্গ ও ফল গুঁড়ো করে), লড়াই, পালক পরিষ্কার ও বাসা গোছানোসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। পুরুষ পাখি আকারে স্ত্রী পাখি থেকে সামান্য বড়। প্রতি প্রজাতির ধনেশের স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বর রয়েছে। অধিকাংশ ধনেশই স্থবির স্বভাবের এবং একটি নিজস্ব এলাকার সীমানার মধ্যেই জোড় হিসেবে বাস করে, যা ১০ হেক্টর থেকে ১০০ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।